খাবার বা ডিনারের শেষে মিষ্টি খেলে শরীর কিন্তু নানা ভাবে উপকার হয়। কী রকম? আসুন, জেনে নিই— ১. যখনই আমরা কিছু খাই, তখন সেই ভুক্ত খাদ্যকে হজম করার জন্যে আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে অ্যাসিড ক্ষরণ শুরু হয়। ঝাল বা তেলমশলাযুক্ত খাবার খেলে অ্যাসিড ক্ষরণের পরিমাণ বাড়ে। বিপরীতক্রমে মিষ্টি খাবার এই অ্যাসিড ক্ষরণের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এর ফলে পরিপাকক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হতে পারে।
২. যে কোনও মিষ্টি খাবার খেলেই শরীরে সেরিটোনিন নামের হরমোন ক্ষরিত হয়। এই হরমোন নিউরোট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ মিষ্টি খাবার খেলে আপনার মধ্যে সুখ এবং আনন্দের অনুভূতি তৈরি হয়। এই অনুভূতি শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি। ৩. ভারি খাবার খাওয়ার পরে আমাদের শরীরে হাইপোগ্লাইসিমিয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই সময়ে শরীরের ব্লাড প্রেসার অত্যন্ত কমে যায় এবং তার ফলে কখনও কখনও শরীরে সাময়িক অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। কিন্তু মিষ্টি খেলে শরীরে রক্তচাপের ভারসাম্য তৈরি হয়।
ফলে কোনও রকম অসুস্থতা বা অস্বস্তির সম্ভাবনা থাকে না। তবে এ কথা ভুললে চলবে না যে, মিষ্টি খাওয়ার কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছেই। মিষ্টি খাবার শরীরে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে। ডাক্তাররা বলেন, আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করা আমরা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য থেকেই সংগ্রহ করে থাকি। ফলে মিষ্টি জাতীয় খাবার শরীরে শর্করার মাত্রা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি করে তোলে।
এর ফলে ডায়বেটিস, কিডনির রোগ, স্থূলতা কিংবা হার্টের রোগের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সমস্যা অনেকটাই এড়ানো যায় যদি সাদা চিনির বদলে খয়েরি চিনি বা ব্রাউন সুগারে তৈরি খাবার খাওয়া যায়। ব্রাউন সুগার না পেলে গুড়ে তৈরি খাবার খেলেও মিষ্টির উপকার পাওয়া সম্ভব।
ভাত খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়ার উপকারিতা কী?
মিষ্টি খেতে কে না ভালবাসেন! তবে অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে ইদানীং মিষ্টি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। তবুও খাওয়ার শেষে মাঝে মধ্যে একটা মিষ্টি বা ওই জাতীয় কিছু খান অনেকেই। খাওয়ার শেষে এই মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস কি শরীর-স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো? নাকি এই অভ্যাস স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর?
রেস্তোরাঁ, জন্মদিনের নিমন্ত্রণে, এমনকী বাড়িতেও যদি প্রচুর পরিমাণে ঝাল-মশলা যুক্ত খাবার খাওয়া হয়, তাহলে তার পর একটু মিষ্টি খেলে কোন ক্ষতি নেই! বিশেষজ্ঞদের মতে, তেল-মশলাদার খাবার খেলে অ্যাসিড ক্ষরণের পরিমাণ বেড়ে যায়।
মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে এই অ্যাসিড ক্ষরণের পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে দেয়। ফলে পরিপাকক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। তাছাড়া, অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাওয়ার পর শরীরের রক্তচাপ অনেকটাই কমে যায়। সেই সময় মিষ্টি খেলে রক্তচাপ দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যায়।
তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে, মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় যে কোন খাবার শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকটাই। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি খাওয়া কখনোই শরীরের পক্ষে ভাল নয়। কারণ, অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি খাওয়ার ফলে শরীরে বাড়তি মেদ জমবে যা ভবিষ্যতে নানা রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে সতর্ক থাকুন।
You must be logged in to post a comment.