শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে দুশ্চিন্তায় আমরা হুটহাট ওষুধ খেয়ে ফেলি। অনেকে আবার একধাপ এগিয়ে ওষুধের দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেয়ে ফেলেন। প্রথম কথা হলো, কোনো ধরনের অসুস্থায়ই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করা যাবে না। দ্বিতীয়ত, জ্বরের ক্ষেত্রে থাকতে হবে আরও বেশি সতর্ক। এর কারণ হলো, আমাদের শরীর একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা পর্যন্ত জ্বর নিজেই প্রতিরোধ করতে পারে।
জ্বর কমিয়ে বাইরে বের হওয়া খুব জরুরি হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট খেতে পারেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে কখনোই অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। জ্বর যদি খুব বেশি না হয় বা জ্বর বেশি এলেও তা দ্রুত কমিয়ে সহনশীল পর্যায়ে আনার জন্য ঘরোয়া এই উপায়গুলো মেনে চলতে পারেন-
মাথায় পানিপট্টি দিন
জ্বর হলে শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা কমানোর অন্যতম কার্যকরী পদ্ধতি হলো জলপট্টি দেওয়া। সেজন্য একটি পরিষ্কার রুমাল ভাঁজ করে সেটি পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে নিন। এরপর ভেজা রুমালটি রোগীর কপালের উপর দিয়ে রাখতে হবে। এভাবে মিনিট দুয়েক পর রুমালটি পুনরায় ভিজিয়ে একইভাবে কপালের উপর দিয়ে রাখতে হবে। এভাবে কয়েকবার করলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
তুলসি পাতার ব্যবহার
৮-১০টি তুলসি পাতা নিন। এবার পাতাগুলো পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে পানি গরম হতে দিন। এর সঙ্গে দিয়ে দিন তুলসি পাতা। ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। এই পানি প্রতিদিন সকালে এককাপ করে খান। তুলসি পাতায় থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা, ব্রংকাইটিস, ম্যালেরিয়ার মতো অনেক রোগের উপশমে সাহায্য করে। এই পাতা শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
জ্বর কমাবে মধু
এক চা চামচ মধু, অর্ধেকটা লেবুর রস ও এককাপ গরম পানি নিন। এবর সব একসঙ্গে মিশিয়ে নিন ভালো করে। এই মিশ্রণ দিনে দুইবার খান। মধুতে আছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা শরীরের ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে। এর ফলে ভাইরাসজনিত জ্বর কমানো সহজ হবে। ভাইরাস জনিত রোগের ক্ষেত্রে লেবুর রস ও মধু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এগুলো শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
আদা দিয়ে সমাধান
আধা চা চামচ আদা বাটা ও এক চা চামচ মধু নিন। এককাপ গরম পানিতে আদা বাটা দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। এরপর তার সঙ্গে মেশান মধু। এই মিশ্রণ দিনে তিন-চারবার পান করতে হবে। এছাড়াও এক চা চামচ লেবুর রস, আধা চা চামচ আদার রস ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে সেটিও দিনে তিন-চারবার খেতে পারেন। এতে জ্বর কমতে থাকবে। কারণ আদা হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টি ভাইরাস। এটি শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
জ্বর কমাতে রসুনের ব্যবহার
এককোয়া রসুন ও এককাপ গরম পানি নিন। রসুন কুচি করে নিয়ে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন দশ মিনিট। এরপর রসুনের কুচিগুলো ছেঁকে নিয়ে পানিটুকু চায়ের মতো খেয়ে নিন। এভাবে দিনে দুইবার খেতে হবে। এছাড়াও রসুন ছেঁচে নিয়ে তার সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে মিশ্রণটি পায়ের তালুতে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এরপর পাতলা কোনো কাপড়ে পা পেঁচিয়ে রাখুন সারারাত। সকালে উঠে দেখবেন জ্বর একেবারে সেরে গেছে। তবে গর্ভবতী বা শিশুর ক্ষেত্রে এটি করা যাবে না।
স্বাস্থ্য পরামর্শ
Really
You must be logged in to post a comment.