শসা
শসা অনেক স্বাস্থ্যসম্মত একটি সবজি। আমাদের দেহের সুস্থতায় এর উপকারিতা অনেক বেশি। রূপচর্চা থেকে শুরু করে রান্না , সালাদ , জুস অনেক ভাবেই শসা আমরা ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আপনি কী জানেন এইসব ছাড়াও শসা আরও এমন কিছু কাজে ব্যবহার করা যায়, যেগুলো আপনাকে অবাক করবে? তাছাড়া শসাতে আছে ভিটামিন সি, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, ফলিক এসিড, কেলসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও জিংক। যাই হোক, আপনি যদি শসা খেতে পছন্দও নাও করেন, শসা দিয়ে আপনি পরিষ্কার করতে পারেন ঘরবাড়ি অথবা পরিষ্কার করতে পারেন আপনার জুতো।
১। ঘরবাড়ির জিনিস পরিষ্কার করুণ শসা দিয়ে
আপনার বাসার যেকোন জিনিস যদি প্রাকৃতিক ভাবে পরিষ্কার করতে চান তাহলে ব্যবহার করতে পারেন শসা। শসা গোল করে কেটে নিয়ে সেখান থেকে এক টুকরো নিয়ে যেকোন কিছু পরিষ্কার করার কাজে ব্যবহার করুন। শসা শুধু আপনার জিনিসের ময়লা দূর করবে না, চাকচিক্যও বৃদ্ধি করবে। আপনার বাসার দেয়ালে যদি কোন দাগও থেকে থাকে তাও আপনি পরিষ্কার করতে পারেন শসা দিয়ে।
২। নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করে
আপনি কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজে বের হয়েছেন কিন্তু নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ অনুভব করছেন তখন আপনি স্বাভাবিক ভাবেই কোন সুগন্ধি চকোলেট খাবেন। কিন্তু এইসব সস্তা পণ্য বাদ দিয়ে একটি শসা কিনে খান, দেখবেন দুর্গন্ধ চলে যাবে।
৩। জুতো পরিষ্কার করুন শসা দিয়ে
জুতোর উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে ও এর ময়লা দূর করতে আপনি শসা ব্যবহার করতে পারেন। এক টুকরো শসার নিন তারপর জুতোর চারপাশে ঘষুন দেখবেন জুতো অনেক পরিষ্কার হয়েছে এবং চকচক করছে।
করল্লা
বাঙালি মাত্রই কমবেশি পরিচিত এই সবজির সাথে। তবে পছন্দের চাইতে অপছন্দের তালিকাই দীর্ঘ। এর তিক্ত স্বাদের জন্য অনেকেই, বিশেষ করে শিশুরা তো কোন মতেই খেতে চায়না করল্লা, তবে সত্যি বলতে কি, ভোজন রসিক বাঙ্গালিই কেবল বোঝেন করল্লার আসল স্বাদ!!
১। হতে পারে করল্লা বিচ্ছিরি তেতো। তবে এই তেতো হওয়াটাই এর স্বাদ। জেনে রাখা ভালো যে খাবারের শুরুটা তেতো দিয়ে হলে তা মুখের মাঝে কিছু বিশেষ এনজাইমের সক্রিয়তা বাড়ায়। ফলে খাদ্য হজম হয় দ্রুত ও সহজে। এবং একারণেই তা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
২। শতবছর ধরে চীন এবং ভারতে তথা সম্পূর্ণ এশিয়াতেই করল্লা ব্যবহৃত হয়ে আসছে ডায়বেটিসের ঔষধ হিসেবে। এতে প্ল্যান্ট ইনসুলিন আছে যা রক্তে গ্লুকোজ লেভেল কম রাখে। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান অঞ্চলের আদিবাসীরাও বহু বছর ধরেই করল্লাকে ডায়াবেটিস, পেটের গ্যাস, হাম ও হিপাটাইটিসের ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। ব্যবহার করে আসছে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে, ম্যালেরিয়া জ্বরে এবং মাথা ব্যথায়ও। করল্লা জন্মায় ট্রপিক্যাল অঞ্চলে। যেমন-এশিয়া, পূর্ব আফ্রিকা, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ আমেরিকা। করল্লায় আছে পালং শাকের চেয়ে দ্বিগুণ ক্যালশিয়াম আর পটাশিয়াম, আছে যথেষ্ট লৌহ, প্রচুর ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং আঁশ। ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি এন্টি অক্সিডেন্ট, যা কিনা শরীরের কোষগুলোকে রক্ষা করে বার্ধক্য ঠেকিয়েও রাখতে পারে! আরও আছে লুটিন আর লাইকোপিন। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। লাইকোপিন শক্তিশালী এন্টি অক্সিডেন্টও বটে।
৩। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডোর ক্যান্সার সেন্টার কর্তৃক গবেষনায় দেখা গ্যেছে যে করল্লা অত্যন্ত সফল ভাবে অগ্নাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম। গবেষনায় দেখা গেলো যে টেস্ট টিউবে রাখা মানুষের অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার কোষে করল্লার জুস প্রয়োগে কোষের মৃত্যুর হার বেড়েছে। কিন্তু কিভাবে? মূলত দ্রূত বর্ধনশীল ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন প্রচুর গ্লুকোস বা চিনি। করল্লা ইন্সুলিন এর নিঃসরন বাড়িয়ে এই গ্লুকোস মেটাবলিসম বা ভেঙ্গে ফেলার ব্যবস্থা করে। ফলে ক্যান্সার কোষ বাড়তে না পেরে মরে যায়। ঠিক একই ভাবে করল্লা নিয়ন্ত্রন করে ডায়বেটিস ও। এছাড়াও রক্তের চর্বি তথা ট্রাইগিস্নসারাইড কমায় করল্লা। এবং ভাল কলেস্টেরল এইচডিএল-HDL কে বাড়ায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ক্রিমিনাশক হিশাবেও করল্লার তুলনা মেলা ভার।
৪। করল্লা ভাইরাস নাশক হিসাবে সমান কার্যকারী। হেপাটাইটিস এ, হারপিস ভাইরাস, ফ্লু, ইত্যাদির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। লিভার ক্যান্সার, লিউকেমিয়া, মেলানোমা ইত্যাদি প্রতিরোধ করতে পারে। করল্লার ল্যাক্সেটিভ পায়খানাকে নরম রাখে ও কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে। জীবাণুনাশী-বিশেষ করে ই কোলাই নামক জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর। ফলে ডায়রিয়াও প্রতিরোধ হয়।
৫। এছাড়া করল্লা নানান রকম চর্মরোগ প্রতিরোধ করতেও অত্যন্ত কার্যকর। করল্লার জুস লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায়, রক্ত পরিশোধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশে করল্লার আরেকটি নাম প্রচলিত আছে- “উস্তা”।
Nice
দারুণ টিপস
Great post
Nice
You must be logged in to post a comment.